শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
‌‌সম্প্রীতি সমাবেশ। কালের খবর সড়ক ও জনপদের ৩য় শ্রেণির কর্মকর্তার সম্পদের পাহাড়। কালের খবর  পেশাদার সাংবাদিকদের সবরকম সুরক্ষা দিতে কাজ করছে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার : এম আব্দুল্লাহ। কালের খবর সরকারি রাস্তা উদ্ধারের দাবিতে শাহজাদপুরে মানববন্ধন। কালের খবর ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ককে সুদৃঢ় করতে হবে : ইউএনও মনজুর আলম। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তা বিতরণ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান। কালের খবর ‘দেশ স্বাধীনের পর তৈরি সংবিধানে কোনো জাতির পিতা ছিল না’ : আদালতকে অ্যাটর্নি জেনারেল। কালের খবর দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে খরচ কমানোর ২৭ উপায়!। কালের খবর ওলামাদের মধ্যে রুহানী ঐক্য প্রয়োজন : জামায়াত আমির। কালের খবর আ.লীগ নেতা সুমন খান গ্রেফতার। কালের খবর
যে থানায় টাকা ছাড়া কিছুই হয় না ! কালের খবর

যে থানায় টাকা ছাড়া কিছুই হয় না ! কালের খবর

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের খবর, ঢাকা :২৪ জুলাই, বিকেল সাড়ে ৩টা। মোটরসাইকেল যোগে তুরাগ থানায় জিডি করতে আসেন দুই যুবক। কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার এস আই খগেন্দ্রনাথ তাদের সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করেন। সমস্যার কথা শুনে জিডি নেন, দেন বিভিন্ন পরামর্শও। এরপর তাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা চেয়ে নেন তিনি।

বিকেল ৪টার দিকে আরেক যুবক থানায় আসেন। এস আই খগেন্দ্রনাথ যথারীতি ওই যুবকের সঙ্গেও ভালো ব্যবহার করে সমস্যার কথা জানতে চান। পারিবারিক সমস্যা জানালে, বাসা কোন এলাকায় এবং স্থানীয় কিনা সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। স্থানীয় ছেলে বলার পরে এক কনস্টেবলকে ডেকে যত্ন করে জিডিটি লিখে দিতে বলেন। পরে ওই যুবকের কাছ থেকেও ২০০ টাকা নেন, এস আই খগেন্দ্রনাথ। অথচ থানার গেটে ও ডিউটি অফিসারের রুমে বড় করে লেখা রয়েছে থানায় আগত সেবাপ্রার্থীর সেবা গ্রহণে অর্থ নিষ্প্রয়োজন। তা ছাড়া ডিউটি অফিসারের কক্ষে রয়েছে সিসি ক্যামেরাও। তারপরও থেমে নেই টাকা নেয়া।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে থানায় আসেন এসআই খগেন্দ্রনাথের পূর্বপরিচিত স্থানীয় এক ফ্যাক্টরির মালিক মানিক। আলাপচারিতায় খগেন্দ্রনাথ ওই ব্যক্তিকে বলেন, আপনার কথামত তাদের সালিস করে দিলাম। কিন্তু আমাকে কোনো টাকা দেয়নি। এ ধরনের কাজে আমাকে আর ডাকবেন না। ওই লোকের পাশেই বসা ছিলেন এ প্রতিবেদক। এস আই খগেন্দ্রনাথ এ প্রতিবেদককে বলেন, শ্রম দিলেতো তাকে টাকা দেয়া উচিত। টাকা না দিলে আমরা শ্রম দিতে যাব কেন। তাই না ভাই ? বিকেল ৫টার দিকে ওই লোকটি চলে যান। পরে জিডি ও অন্যান্য সেবার বিনিময়ে কেন টাকা নেন, জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি এসআই খগেন্দ্রনাথ।

জানা গেছে, থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস ও ফ্যাক্টরি থাকায় প্রায়ই টাকা লেনদেনের সালিসি করতে হয় পুলিশকে। সেখান থেকে টাকার পরিমাণ বুঝে ‘বখরা’ নেন পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়াও জিডি ও মামলাসহ যেকোনো সেবা নিতেই গুণতে হয় টাকা। তা ছাড়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে রয়েছে অবৈধ অটোরিকশা থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগও। মাসে ৩০০ টাকা দিয়ে একটি কার্ড নিতে হয় অটোচালকদের। অটোতে ওই কার্ড থাকলে থানা পুলিশ কিছু বলে না। কিন্তু না থাকলে অটোরিকশা আটক করা হয়। গুণতে হয় ৬০০ টাকা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তুরাগ থানার ওসি নুরুল মুত্তাকিম কালের খবরকে  বলেন, আমার থানায় জিডি বা মামলায় টাকা নেয়াটা অসম্ভব। পরে ঘটনা দুটি বললে ওসি বলেন, আমি বিষয়টি দেখছি। টাকা নিয়ে থাকলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অটোরিকশা থেকে চাঁদা উঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার নলেজে নেই।

এদিকে থানাটিতে নিজস্ব ভবন থাকলেও রয়েছে নানা সমস্যা। বিভিন্ন মামলায় জব্দকৃত গাড়ি রাস্তার উপরই জড়ো করে রাখতে হয়। থানার গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য আশপাশের ফ্যাক্টরির জায়গাই ভরসা। আবাসিক সমস্যাও চরম বলে জানিয়েছেন থানার পুলিশ সদস্যরা। নেই মহিলা হাজতখানা। ফলে মহিলা আসামি আটক হলে সেরেস্তা রুমই ভরসা।

কর্মকর্তারা জানান, খায়েরটেক, কালিয়ারটেক, রোসাদিয়া, কামারপাড়া, ভাটুলিয়া, নয়ানীচালা, রাজাবাড়ী, ধউর, সেকদিকটেক, পুরানকালিয়া, নয়ানগর, শুক্রাভাংগা, নলভোগধর, নিমতলীরটেক, তারারটেক, ডিয়াবাড়ী চন্ডালভোগ, ফুলবাড়ীয়া, রানাভোলা, বামনারটেক, বাইলজুরী, পাকুরিয়া, আহলিয়া, দলিপাড়া, বাউনিয়া, বাদালদী, উলুদাহা, তাফলিয়া, চান্দুরা, মান্দুরা ও ষোলহাটি এলাকা নিয়ে থানাটি গঠিত। এ থানায় ১ জন অফিসার ইনচার্জ (ওসি), ২ জন ইন্সপেক্টর, ১৮ জন এসআই, ২৫ জন এএসআই ও ৪২ জন কনস্টেবল রয়েছে। প্রতি মাসে এ থানায় ৩৫-৪০টি মামলা হয়, যার বেশিরভাগই মাদক সংশ্লিষ্ট।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com